ফলের রাজা আম


ফলের রাজা আম
ফলের রাজা হিসেবে পরিচিত আম। শুধু আমাদের দেশেই নয়, সারা পৃথিবীতে এর সুনাম ও জনপ্রিয়তা রয়েছে। প্রায় সব বয়সী মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় এই ফলটি। পৃথিবীতে নানান প্রজাতির আম রয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশেই বেশ কয়েক প্রজাতির আম পাওয়া যায়। সহজলভ্য হওয়ায় ও প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকায় আম পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
আমের পুষ্টিগুণঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা ফলে (আহারোপযোগী) আমিষ ১ গ্রাম, শর্করা ২০ গ্রাম, চর্বি ০ দশমিক ৭ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০ দশমিক ৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, লৌহ ১ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৮৩০০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন-বি১ ০ দশমিক ১০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি২ ০ দশমিক ০৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ৪১ মিলিগ্রাম এবং খাদ্যশক্তি রয়েছে ৯০ কিলোক্যালরি।
আমের উপকারিতাঃ
- আমের ক্যারোটিন চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশি দূর করে।
- কার্বোহাইড্রেইট কর্মশক্তি যোগায়।
- আমের আয়রন অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে।
- ক্যালসিয়াম হাড় সুগঠিত করে, হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে।
- আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি।
- এর পটাশিয়াম রক্ত স্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে সাহায্য করে।
- এই ফলের আঁশ, ভিটামিন ও খনিজ উপাদান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে।
- আম কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, রক্তস্বল্পতা ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- পাকাআম রক্তে কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
আমাদের দেশে গোপালভোগ,রাণী পছন্দ, খিরসাপাত আম, আশ্বিনা ও ফজলী, বারি আম-২ বা লক্ষণভোগ, রুপালী আম বা আম্রপালি, ল্যাংড়া ইত্যাদি জাতের আমই বেশি জনপ্রিয়। আম কিনতে গিয়ে আমরা অনেক সময় প্রতারিত হই। তাই আম ক্রয়ের পূর্বে আসুন জেনে নিই কোন আম দেখতে কেমন?
গোপালভোগঃ
গোপালভোগের গায়ে হলুদ ছোপ ছোপ দাগ আছে। এটির নিচের দিকে একটু সরু হয়ে থাকে। এই আম পাকার পর হলুদ হয়ে যায়। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পাওয়া যায় এই আম।
রাণী পছন্দঃ
রাণী পছন্দ দেখতে অনেকটা গোপালভোগের মতই। এর গায়েও হলুদ দাগ আছে কিন্তু আকারে ছোট। ফলে গোপালভোগের সঙ্গে রানী পছন্দ মেশালে আলাদা করা কষ্টকর।
খিরসাপাত আমঃ
এই আম বাজারে পাওয়া যায় মে মাসের শেষে বা জুনের প্রথম সপ্তাহে। খুবই মিষ্টি খিরসাপাত আম অনেকে হিমসাগর বলে বিক্রি করেন। এই আম আকারে একটু বড় হয়। আমে হালকা দাগ আছে।
আশ্বিনা ও ফজলীঃ
আশ্বিনা আর ফজলী আম দেখতে একই রকম। তবে আশ্বিনা আম একটু বেশি সবুজ ও ফজলী আম একটু হলুদ হয়। আশ্বিনার একটু পেট মোটা হয় ও ফজলী দেখতে লম্বা ধরনের হয়।
বারি আম-২ বা লক্ষণভোগঃ
বারি আম-২ বা লক্ষণভোগ চেনার সহজ উপায় হলো নাক আছে মাঝামাঝি স্থানে। মিষ্টি কম ও পাকলে হলুদ রং আসে। সাধারণত জুন মাসের শুরুর দিকে এই আম বাজারে পা্ওয়া যায়।
রুপালী আম বা আম্রপালিঃ
রুপালী আম বা আম্রপালি নিচের দিকে একটু সুঁচালো, উপরে একটু গোল। এই আমরা মিষ্টি বেশি ও স্বাদে ভিন্নরকম।
ল্যাংড়াঃ
ল্যাংড়া আম দেখতে কিছুটা গোলাকার ও মসৃণ। এটির নাকটি দেখা যায় নিচের দিকে। এর চামড়া খুবই পাতলা।
পরিপক্ক আম যেভাবে চিনবেনঃ
পাকা আম সাধারণ হলুদাভ হয় এবং পানিতে রাখলে ডুবে যায়।